নিজস্ব প্রতিবেদক: অনলাইনভিত্তিক এমএলএম ব্যবসা করে বছর না ঘুরতেই গ্রাহকের ১ কোটি ২২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে এবার আলোচনায় “কি কিনবেন” নামের কোম্পানীটি। প্রায় পাচ বছর আগে সাঈদুর রহমান সাঈদ নামের পুরোনো ঢাকার এক প্রতারক বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে অনলাইন ভিত্তিক প্রতারণার সিন্ডিকেট গড়ে তোলে। তার লক্ষ্যই ছিল সেরা ধনী হওয়া। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ই-কমার্স ব্যবসার লাইসেন্স ছাড়াই সাধারণ মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে অনলাইনে অ্যাপসের মাধ্যমে শুরু করেন এই সাঈদুর রহমান।
২০২১/২২ সালে ই কমার্সের প্রতরনা ঠেকাতে যখন সিআইডিসহ দেশে বিভিন্ন আইনশৃখলা বাহিনী তৎপড়তা শুরু করে তখন এই সাঈদুর রহমানের “কি কিনবেন” প্রতিষ্ঠানটি থেকে যায় সবার আড়ালে। তখন ই কমার্সের ব্যবসা বন্ধ করে প্রতারক সাঈদুর রহমান অন্য প্রতারনার দিকে মনোযোগী হয়।
“কি কিনবেন” এর ঠিকানার ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেজ ও ইউটিউবে শত শত পোস্টের মাধ্যমে ই-কমার্সের কথা বলে নানা ধরনের নকল প্রসাধণীসহ বিভিন্ন আইটেম বিক্রি করে প্রতারক সাঈদুর। সেখানে ৯০/৯১ নাজিমউদ্দিন রোডের এসএইচ প্লাজার যে ঠিকানা ব্যবহার করেছে সেখানে সত্যিকার অর্থে “কি কিনবেন” ওর কোনো অফিসই নেই। খোজ নিয়ে জানায় প্রতারনা করে মানুষের কাছ থেকে টাকা নেয়ার পর পন্য না দিয়ে টাকা নিয়ে অন্যস্থানে চলে যায় সাঈদুর। এখন পুরোনো ঢাকার নারিন্দাতে সে আবার প্রতারনার ফাদ পেতে বসেছে বলে জানায় ভুক্তভুগিরা। ঠিকানায় বর্নিত নাজিমউদ্দিন রোডের সেই কার্যালয়ে গেলে সেখাকার অফিস কর্তারা জানান তিন বছর আগেই সেখান থেকে পালিয়ে যায় “কি কিনবেন” এর মালিক সাঈদুর।
“কি কিনবেন” এই পেইজে যেয়ে দেখাযায় বিদেশ পন্য বলে নিরীহ মানুষকে লোভ দেখিয়ে মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে। আগ্রহীরা যখন দেশে ই-কমার্স চালু হয়েছিল, সরকারের নীতিনির্ধারকেরা এর পক্ষে জোর প্রচার চালিয়েছিলেন। সাধারণ গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে মাঠে নেমেছিলেন বিভিন্ন মাধ্যমের বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও। রাতারাতি অনেক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠল সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়েই। বেশ কিছু ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের প্রতারণা গণমাধ্যমে আসে, যারা গ্রাহকদের কাছ থেকে অর্থ নিয়েও পণ্য দেয়নি।
যেসব প্রতিষ্ঠানের নামে গ্রাহকদের টাকা মেরে দেওয়ার অভিযোগ এসেছে, সেগুলো হচ্ছে ধামাকা শপিং, আলেশা মার্ট, ই-অরেঞ্জ, সিরাজগঞ্জ শপ, আলাদিনের প্রদীপ, বুমবুম, আদিয়ান মার্ট, নিড ডট কম এবং কিউকম। এর মধ্যে ই-অরেঞ্জ নামের একটি প্রতিষ্ঠান ছদ্মনামে পরিচালনা করছিলেন গুলশান থানার একজন পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি কোটি কোটি টাকা নিয়ে দেশ থেকে পালিয়ে গেছেন এবং ভারতে ধরা পড়েছেন।অথচ এখনো ধরা ছোয়ার বাইরে প্রতারক সাঈদুর রহমান সাঈদ। সাঈদুর রমহান সাঈদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ সরকারের কর ফাকি দেয়া। জানাযায় কোটি কোটি টাকা প্রতারনার মাধ্যমে আয় করলেও সরকারের রাজস্ব ফাকি দেয় প্রতারক সাঈদুর রহমান।
এসব বিষয়ে কথা বলতে অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডির কর্মকর্তাদের সাথে কথা বললে তারা জানান অনেক প্রতারক ই কমার্স প্রতিষ্ঠান রাজধানীর বিভ্নি গলিতে অফিস নিয়ে ফেসবুকের বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রতরনা করে। গনমাধ্যমে নজরে আনার পর তারা তদন্তে নামে বলেও জানান সিআইডির গনসংযোগ বিভাগের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার আবুল কালাম আজাদ। এসব প্রতারনার বিষয়ে সাঈদুর রহমান সাঈদের সাথে কথা বলতে চাইলে মুঠোফোনের কল রিসিভ করেনি প্রতারক সাঈদ।
(চলবে)